মধ্য কলকাতার এজরা স্ট্রিটে বিধ্বংসী আগুন: পুড়ে ছাই বৈদ্যুতিন সামগ্রীর গুদাম, ফের প্রশ্নের মুখে অগ্নি-সুরক্ষা
Kolkata Ezra Street Fire News: শনিবার ভোরে লালবাজার সংলগ্ন এজরা স্ট্রিটে বৈদ্যুতিন সামগ্রীর গুদামে ভয়াবহ আগুন। ২০টি Fire Engine ঘটনাস্থলে। Massive loss of electronics goods. Fire Safety in Central Kolkata commercial area questioned again. No casualties reported.
নিজস্ব সংবাদ, লোকসংবাদ
কলকাতা: ১৫ নভেম্বর, ২০২৫
শনিবার ভোরে ফের এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী হলো মধ্য কলকাতা। লালবাজার সংলগ্ন এজরা স্ট্রিটের (Ezra Street) একটি বহুতলে অবস্থিত বৈদ্যুতিন সামগ্রীর গুদামে (Electronics Warehouse) আগুন লেগে মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের লেলিহান শিখা এবং কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে ঢেকে যায় গোটা এলাকা। ভোর ৫টা নাগাদ এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় বলে খবর।
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দমকল, ব্যাপক ক্ষতি
আগুন লাগার খবর পেয়েই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকল বাহিনী। প্রথমে ১০টি ইঞ্জিন এলেও, পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হওয়ায় তা বাড়িয়ে কমপক্ষে ২০টি ইঞ্জিনে পরিণত করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের দমকল ও জরুরি পরিষেবা বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল রণবীর কুমার জানিয়েছেন, বহুতলটিতে মূলত ইলেকট্রনিক্স ও বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম মজুত থাকায় ধোঁয়ার পরিমাণ ছিল অনেক বেশি এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয়।
"পরিস্থিতি এখন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে। আগুন এক জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ করা গেছে। যেহেতু বৈদ্যুতিন সামগ্রী রয়েছে, তাই ধোঁয়া প্রচুর। ২০টি ইঞ্জিন এবং ৯টি জলের জেট কাজ করছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি,"— রণবীর কুমার, ডিজি, দমকল ও জরুরি পরিষেবা।
অগ্নিকাণ্ডের তীব্রতার কারণে ঘিঞ্জি ওই বাণিজ্যিক এলাকার বেশ কিছু দোকান ও গুদাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যদিও ভোরবেলা হওয়ায় দোকানগুলি বন্ধ ছিল, ফলে কোনো হতাহতের খবর মেলেনি, কিন্তু ব্যবসায়ীদের লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। দমকল কর্মীরা ল্যাডার (Ladder) এবং ব্রেথিং অ্যাপারেটাস (Breathing Apparatus) ব্যবহার করে আগুন নেভানোর কাজ করেন।
অগ্নি-সুরক্ষার প্রশ্নে বারবার বিদ্ধ কলকাতা
এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের পর আবারও কলকাতার ঘিঞ্জি বাণিজ্যিক এলাকাগুলির অগ্নি-সুরক্ষা (Fire Safety) ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
সংকীর্ণ রাস্তা ও দাহ্য পদার্থ: এজরা স্ট্রিট এলাকাটি অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এবং সংকীর্ণ গলিতে ভরা। এখানে ইলেকট্রিক তার, প্লাস্টিক, কাঠের বাক্স এবং দাহ্য বৈদ্যুতিন সামগ্রী ঠাসা থাকে। এই দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি এবং দমকলের গাড়ি পৌঁছানোর অসুবিধা আগুনের বিস্তারকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।
পুরনো বিল্ডিং: এলাকার বেশিরভাগ বাণিজ্যিক ভবনই বহু পুরনো এবং সেগুলিতে আধুনিক অগ্নি-নির্বাপক ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ।
প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিট (Short Circuit) থেকেই আগুন লেগে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে আগুনের প্রকৃত কারণ জানতে ফরেনসিক (Forensic) পরীক্ষা করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ এই ভয়াবহ ঘটনায় ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।