দিল্লিতে মেয়ের ওপর বিপদের হুমকি, 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' করে কলকাতায় দম্পতির ৬৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকরা
কলকাতা: খোদ তিলোত্তমায় ফের থাবা বসালো সাইবার অপরাধীরা। দিল্লিতে থাকা মেয়ের ওপর বিপদের ভয় দেখিয়ে এবং দীর্ঘ ২০ দিন ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ বা ভার্চুয়াল নজরবন্দি করে রেখে কলকাতার এক প্রবীণ দম্পতির সারাজীবনের সঞ্চয় প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। উত্তর ২৪ পরগনার দমদমের নাগেরবাজার এলাকার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাগেরবাজারের কাজীপুরার বাসিন্দা ওই প্রবীণ ব্যক্তি পেশায় আদালতের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী এবং তাঁর স্ত্রী প্রাক্তন স্কুল শিক্ষিকা। প্রতারণার এই জাল বিছানো শুরু হয় গত ৭ নভেম্বর। জনৈক ব্যক্তি নিজেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র (ED) আধিকারিক পরিচয় দিয়ে ওই প্রবীণকে ফোন করেন। অভিযোগ করা হয়, তাঁর আধার কার্ড ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ আর্থিক লেনদেন হয়েছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃদ্ধের বয়স বিবেচনা করে তৎক্ষণাৎ থানায় না নিয়ে যাওয়ার ‘সহানুভূতি’ দেখিয়ে তাঁদের বাড়িতেই ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ বা ভার্চুয়াল নজরবন্দি করা হয়। প্রতারকরা ইডি ও সিবিআইয়ের লোগো দেওয়া জাল নথি এবং সুপ্রিম কোর্টের ভুয়া চার্জশিট পাঠিয়ে দম্পতিকে চরম আতঙ্কিত করে তোলে।
প্রতারকরা শর্ত দেয়, এই তদন্ত থেকে রেহাই পেতে এবং নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে দম্পতিকে ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকা জমা দিতে হবে। ভয় দেখাতে হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কলে তাঁদের ২৪ ঘণ্টা নজরবন্দি করে রাখা হয়। এমনকি শৌচাগারে যাওয়ার সময়ও তাঁদের ভিডিও কল সচল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কোনো দর্শনার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা বা ঘর থেকে বের হওয়াও তাঁদের জন্য নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
দম্পতি যখন তাঁদের ফিক্সড ডিপোজিট এবং সঞ্চিত টাকা শেষ করে ফেলেন, তখন প্রতারকরা দিল্লিতে থাকা তাঁদের মেয়ের ওপর আঘাত হানার ও তাঁকে গ্রেপ্তার করার হুমকি দিতে শুরু করে। মেয়ের প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কায় বৃদ্ধা তাঁর নিজের সমস্ত সোনার গয়না বিক্রি করে দিয়ে সেই টাকাও প্রতারকদের পাঠানো অ্যাকাউন্টে জমা দেন। সব মিলিয়ে মোট ৭টি কিস্তিতে প্রায় ৬৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ২০৫ টাকা প্রতারকদের জালে চলে যায়।
আরও পড়ুন (Read More):
1️⃣ 🔹 রাজ্য সংবাদ (West Bengal News) 👉 জেলা থেকে ব্লক স্তর—পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি কোণার সর্বশেষ রাজনৈতিক ও সামাজিক খবর।
2️⃣ 🔹 সরকারি চাকরি (West Bengal Govt Jobs) 👉 নতুন চাকরির বিজ্ঞপ্তি, পরীক্ষার রুটিন এবং ক্যারিয়ার গড়ার যাবতীয় নির্ভরযোগ্য আপডেট।
3️⃣ 🔹 স্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল (Health & Lifestyle) 👉 সুস্থ থাকার ঘরোয়া উপায়, ডায়েট চার্ট, মানসিক স্বাস্থ্য এবং আধুনিক জীবনযাত্রার গাইড।
4️⃣ 🔹 বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (Tech & Science) 👉 মহাকাশ গবেষণা থেকে লেটেস্ট স্মার্টফোন—প্রযুক্তির দুনিয়ার বিস্ময়কর সব তথ্য।
5️⃣ 🔹 খেলার দুনিয়া (Sports Update) 👉 ফুটবল, ক্রিকেট থেকে শুরু করে অলিম্পিক; খেলার মাঠের লাইভ আপডেট ও বিশ্লেষণ।
6️⃣ 🔹 আবহাওয়ার খবর (Weather Update) 👉 আপনার এলাকার আজকের তাপমাত্রা, বৃষ্টির পূর্বাভাস এবং আবহাওয়া দপ্তরের জরুরি সতর্কবার্তা।
7️⃣ 🔹 সাহিত্য ও সংস্কৃতি (Culture & Literature) 👉 উৎসবের খবর, নতুন বইয়ের হদিস এবং বাঙালির চিরাচরিত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের গল্প।
8️⃣ 🔹 তিলোত্তমা কলকাতা (Kolkata News) 👉 শহরের ট্রাফিক আপডেট, মেয়রের বিশেষ ঘোষণা এবং মহানগরের অন্দরের সব খবর।
9️⃣ 🔹 বিনোদন জগৎ (Entertainment) 👉 সিনেমা, সিরিয়াল, ওটিটি রিলিজ এবং রুপোলি পর্দার তারকাদের অন্দরমহলের কথা।
২৯ নভেম্বর প্রতারকদের ফোন আসা বন্ধ হলে এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে ওই দম্পতি বুঝতে পারেন তাঁরা ভয়াবহ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। দীর্ঘ ট্রমায় থাকার পর গত রবিবার ২৮ ডিসেম্বর তাঁরা নাগেরবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে সেগুলোর সাথে বিদেশের যোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুলিশ ও সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো কেন্দ্রীয় সংস্থাই এভাবে ভিডিও কলের মাধ্যমে কাউকে ‘অ্যারেস্ট’ করে না বা জামিনের নামে অনলাইনে টাকা দাবি করে না। এই ধরনের কোনো ফোন বা ভিডিও কল এলে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় থানা বা জাতীয় সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩০-এ যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
Source:
এই সংবাদটি The Times of India (TOI)-এর কলকাতা সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
লিঙ্ক:
Disclaimer:
সতর্কতা: এই সংবাদটি কেবল জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে পরিবেশিত। কোনো সরকারি বা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (যেমন ED, CBI, বা পুলিশ) হোয়াটসঅ্যাপ বা ভিডিও কলের মাধ্যমে কাউকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করে না বা মামলার নিষ্পত্তির জন্য ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে অর্থ দাবি করে না। এই ধরনের কোনো সন্দেহজনক ফোন বা মেসেজ পেলে আতঙ্কিত না হয়ে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় থানা অথবা জাতীয় সাইবার অপরাধ হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩০-এ যোগাযোগ করুন। ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে সর্বদা সতর্কতা অবলম্বন করুন।
LOKSANGBAD-এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত।
আমাদেরকে অনুসরণ করুন:
Twitter:
https://x.com/loksangbad_news