মৃত্যুদণ্ডের পর ভারতকে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের তীব্র আর্জি
১৭ নভেম্বর, ২০২৫।
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার পর বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নয়া দিল্লির কাছে তীব্র আর্জি জানিয়েছে ঢাকা। একইসঙ্গে, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও প্রত্যর্পণের দাবি করা হয়েছে; তাঁকেও বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। খবরে প্রকাশ, হাসিনা এবং কামাল উভয়কেই অনুপস্থিতিতেই (in absentia) দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং তাঁরা বর্তমানে ভারতেই অবস্থান করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিদ্যমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী হাসিনা ও কামালকে হস্তান্তর করা ভারতের জন্য একটি "বাধ্যতামূলক কর্তব্য"। বাংলাদেশের আইন মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান আসিফ নজরুল আল-জাজিরাকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, "যদি ভারত গণহত্যাকারীর আশ্রয় দিতে থাকে, তবে এই বিষয়টি যে বাংলাদেশের প্রতি ও তার জনগণের প্রতি কেমন শত্রুতা তৈরি করবে, তা ভারতকে বুঝতে হবে।"
জানা গিয়েছে, গত বছর (২০২৪) শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে হওয়া ছাত্র নেতৃত্বাধীন ব্যাপক প্রতিবাদ দমন করতে প্রাণঘাতী অভিযান চালানোর অভিযোগেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করেছে, এই হামলাগুলি ছিল "বেসামরিক জনসংখ্যার বিরুদ্ধে নির্দেশিত" এবং "ব্যাপক ও সুপরিকল্পিত"।
অন্যদিকে, শেখ হাসিনা এই ট্রাইব্যুনালকে "পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" বলে বর্ণনা করেছেন এবং প্রতিবাদকারীদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এই রায় "কারচুপি করা ট্রাইব্যুনাল" দ্বারা পাস হয়েছে, যা একটি "অনির্বাচিত সরকার" দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। পাশাপাশি, আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যায্য সুযোগ না পাওয়ারও অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
এই বিষয়ে ভারতের সরকারি প্রতিক্রিয়ায় অবশ্য প্রত্যর্পণের দাবি নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে যে তারা ট্রাইব্যুনালের রায়টি 'নোট' করেছে। বিদেশ মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, "একটি ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের মানুষের সর্বোত্তম স্বার্থের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে সেই দেশে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতা। সেই লক্ষ্যে আমরা সর্বদা সমস্ত অংশীদারদের সাথে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।"
লোকসংবাদ (Loksangbadnews)
সবার আগে, সবসময়—আপনার কাছে।