সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নড়েচড়ে বসল কলকাতা পৌরসংস্থা: ৫০০০ কুকুর রাখার জন্য নতুন ডগ পাউন্ডের পরিকল্পনা
কলকাতা, ২০ নভেম্বর, ২০২৫: সুপ্রিম কোর্টের (SC) কড়া নির্দেশ মেনে চলার জন্য এবার বড়সড় পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে কলকাতা পৌরসংস্থা (KMC)। শহর থেকে পথ কুকুরদের সরিয়ে শেল্টারে রাখার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই নির্দেশ পালনের জন্য বর্তমান পরিকাঠামো সম্পূর্ণ অপ্রতুল হওয়ায়, প্রায় ৫,০০০ পথ কুকুরকে জায়গা দেওয়ার জন্য একটি নতুন ও আধুনিক ডগ পাউন্ড তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে KMC।
লোকসংবাদ (LokSangbad) - সত্যের পথে, মানুষের সাথে
নভেম্বর ২০, ২০২৫
বর্তমান পরিকাঠামো অপ্রতুল, নতুন স্থান খুঁজছে KMC
বর্তমানে কলকাতা পৌরসংস্থার অধীনে ধাপা এবং এন্টালির দুটি ডগ পাউন্ড রয়েছে, যেখানে সব মিলিয়ে মাত্র ২৮০টি কুকুর রাখার জায়গা আছে। যা কিনা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করার জন্য একেবারেই যথেষ্ট নয়।
কলকাতা পৌরসংস্থার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অতীন ঘোষ বুধবার জানিয়েছেন, সম্প্রতি শীর্ষ আদালত দেশজুড়ে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, বাস স্টপ এবং রেল স্টেশন-সহ সমস্ত জনবহুল স্থান থেকে পথ কুকুরদের ধরে শেখানে আশ্রয় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, নির্বীজকরণের পর এই কুকুরদের আর তাদের পুরনো এলাকায় ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না।
ঘোষ বলেন, "আমাদের এমন একটি জায়গা দরকার যেখানে প্রায় ৫,০০০ কুকুরকে রাখা যাবে। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা সহজ নয়, কারণ পরিকাঠামো এবং অর্থের অভাব রয়েছে।"
ধাপায় নতুন সুবিশাল ডগ পাউন্ডের সম্ভাবনা
এই বিপুল সংখ্যক কুকুরকে humane বা মানবিক পদ্ধতিতে স্থানান্তরিত করার জন্য KMC একটি বড় জমির সন্ধান করছে। ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের মতে, শুধুমাত্র খাঁচায় বন্দি করে রাখা নয়, কুকুরদের বিচরণের জন্য একটি বড় এলাকা সম্বলিত সুবিধা তৈরি করতে চায় KMC। এমনকি, যে এলাকা থেকে কুকুরদের তুলে আনা হবে, সেখানকার মানুষেরা যেন সেখানে গিয়ে তাদের দেখতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকার মধ্যে ধাপাতে সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শনের জন্য KMC-এর আধিকারিকদের নিয়ে যাচ্ছেন অতীন ঘোষ। তবে জলাভূমি অঞ্চলে নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি এবং অন্যান্য ছাড়পত্র পাওয়ার ওপরই নতুন ডগ পাউন্ড তৈরির বিষয়টি নির্ভর করছে।
অতীন ঘোষ আরও জানান, ২০০৭ সালের সমীক্ষা অনুসারে শহরে পথ কুকুরের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৫,০০০। যদিও KMC তাদের নির্বীজকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে, তবে যোগ্য পশু চিকিৎসকের অভাবে এই কাজের গতি অত্যন্ত ধীর। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা পড়ুয়ারাও পথ কুকুরদের চিকিৎসা বা নির্বীজকরণের কাজে আগ্রহী হচ্ছেন না, যা এই উদ্যোগের সামনে একটি বড় বাধা। নতুন ডগ পাউন্ড তৈরি ও পরিচালনার জন্য বেসরকারি সংস্থা (NGO) এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনুদানও প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।