বিপদ কাটেনি! দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার—এই চারটি বন্যা-বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের জেলায় আবারও চরম সতর্কতা বা 'রেড অ্যালার্ট' জারি করলো আবহাওয়া দফতর (IMD)।
বৃষ্টির পূর্বাভাস ও ভূমিধসের আশঙ্কা
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত এই চার জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষত জলপাইগুড়ির এক-দু'টি জায়গায় অত্যন্ত ভারী (Extremely Heavy) বৃষ্টি হতে পারে।
একদিকে যেমন তিস্তা, তোর্সা, রাইডাক ও জলঢাকা নদীর জলস্তর মারাত্মকভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তেমনই অন্যদিকে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙের পাহাড়ি অঞ্চলে ফের বড়সড় ভূমিধস (Landslide) হতে পারে।
নিচু এলাকাগুলিতে জল জমা (Waterl
ogging) এবং প্লাবনের (Inundation) সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় 'মনথা'-র প্রভাব
আগে যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মনথা' ছিল, সেটি দুর্বল হয়ে এখন নিম্নচাপ রূপে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের উপর অবস্থান করছে। কিন্তু এই আবহাওয়ার প্রভাবে উত্তরবঙ্গের এই চার জেলায় বিপুল বৃষ্টিপাত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা সংস্থা (GSI) জানিয়েছে, বর্ষার পর পাহাড় সম্পূর্ণ ভিজে রয়েছে, তাই এই ভারী বৃষ্টিতে ভূমিধসের ঝুঁকি আরও বহুগুণ বেড়ে গেছে।
অক্টোবর মাসের বন্যার স্মৃতি
মনে রাখতে হবে, ৪ঠা অক্টোবর রাতে এবং ৫ই অক্টোবর ভোরে হওয়া ভারী বৃষ্টির জেরেই এই চারটি জেলা সহ কোচবিহারেও ভয়াবহ বন্যা ও ধস নেমেছিল।
ওই বিপর্যয়ে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। দার্জিলিং জেলার মিরিক এবং জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় ৫ই অক্টোবরের এই বন্যাকে 'ম্যান-মেড' বা মানব-সৃষ্ট বলে দাবি করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভুটান তার বাঁধ থেকে বিপুল পরিমাণ জল ছেড়ে দেওয়ায় downstream-এর এই জেলাগুলিতে জলস্ফীতি ঘটে।
📅 উত্তরবঙ্গ আবহাওয়া (৩১শে অক্টোবর থেকে ২রা নভেম্বর)
জেলা সতর্কতা প্রধান পূর্বাভাস (৩১শে অক্টোবর, শুক্রবার) সম্ভাব্য প্রভাব দার্জিলিং রেড অ্যালার্ট (Red Alert) ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (৭-২০ সেমি)। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিধসের আশঙ্কা, রাস্তা বন্ধ, দৃশ্যমানতা হ্রাস। কালিম্পং রেড অ্যালার্ট (Red Alert) ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (৭-২০ সেমি)। ভূমিধস এবং নদীর জলস্তর বৃদ্ধি (তিস্তা) পাওয়ার আশঙ্কা। জলপাইগুড়ি রেড অ্যালার্ট (Red Alert) অতি প্রবল বৃষ্টিপাত (>২০ সেমি), বিশেষ কিছু জায়গায়। নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার তীব্র আশঙ্কা, নদীর জলস্তর বৃদ্ধি। আলিপুরদুয়ার রেড অ্যালার্ট (Red Alert) ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (৭-২০ সেমি)। বন্যা ও জল জমার (Waterlogging) সম্ভাবনা। কোচবিহার কমলা সতর্কতা (Orange Alert) ভারী বৃষ্টিপাত। জল জমার সম্ভাবনা। উত্তর দিনাজপুর হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert) হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদা হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert) বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি।
📍 সতর্কতা: সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের বিশেষ করে পাহাড় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশাবলী মেনে চলুন।