Haryana Explosives Recovery: হরিয়ানায় বিপুল বিস্ফোরক ও অস্ত্র উদ্ধার; আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির চিকিৎসক সহ ২ জন গ্রেফতার, তদন্তে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ

হরিয়ানায় বিপুল বিস্ফোরক ও অস্ত্র উদ্ধার; আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির চিকিৎসক সহ ২ জন গ্রেফতার, তদন্তে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ




নিজস্ব প্রতিবেদন | লোকসংবাদ:

জাতীয় নিরাপত্তা এবং জঙ্গি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক বড় সাফল্য এলো। হরিয়ানার ফরিদাবাদে একটি সমন্বিত অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম এবং আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ (J&K Police) এবং হরিয়ানা পুলিশের যৌথ দল। এই ঘটনায় আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির (Al-Falah University) একজন চিকিৎসক সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ধৃতদের মধ্যে একজনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই এই বিপুল পরিমাণ সামগ্রীর হদিশ মেলে।

বিস্ফোরক ও অস্ত্রের বিশাল ভাণ্ডার উদ্ধার

ফরিদাবাদের পুলিশ কমিশনার সতেন্দ্র কুমার গুপ্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এটি জম্মু ও কাশ্মীর এবং হরিয়ানা পুলিশের একটি চলমান যৌথ অভিযান ছিল। অভিযান চলাকালীন আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির চিকিৎসক ডঃ মুজাম্মিল নামে এক অভিযুক্তকে পাকড়াও করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একাধিক স্যুটকেস এবং একটি বালতি থেকে প্রায় ৩৬০ কিলোগ্রাম দাহ্য পদার্থ উদ্ধার হয়েছে। এই দাহ্য পদার্থগুলি সম্ভবত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, যা আইইডি (IED) বা বিস্ফোরক তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে পুলিশ নিশ্চিত করেছে, উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে কোনো আরডিএক্স (RDX) বা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সামরিক বিস্ফোরক নেই।

এছাড়াও, উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে ছিল:

  • ১টি অ্যাসল্ট রাইফেল (যা AK-47-এর চেয়ে সামান্য ছোট) ও এর ৩টি ম্যাগাজিন এবং ৮৩টি তাজা কার্তুজ।

  • ১টি পিস্তল ও এর ৮টি তাজা কার্তুজ, অতিরিক্ত ২টি ম্যাগাজিন এবং ২টি ব্যবহৃত কার্তুজ।

  • আইইডি তৈরির সরঞ্জাম: ২০টি টাইমার, ২৪টি রিমোট, প্রায় ৫ কেজি ওজনের ভারি ধাতু, ওয়াকি-টকি সেট, ইলেকট্রিক ওয়্যারিং এবং বিভিন্ন ব্যাটারি।

কাশ্মীর সংযোগ এবং অভিযুক্তদের পরিচয়

পুলিশ জানিয়েছে, এই অভিযানে মোট দু'জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফরিদাবাদ থেকে ডঃ মুজাম্মিল ছাড়াও জম্মু ও কাশ্মীরের সাহারানপুর থেকে আদিল রাদার নামে আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।

তদন্তকারী সংস্থাগুলি জানিয়েছে, আদিল রাদারকে প্রথমে শ্রীনগরের গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজে (GMC) তার লকার থেকে একটি AK-47 রাইফেল উদ্ধারের পর আটক করা হয়েছিল। পুলিশের সূত্র অনুযায়ী, আদিল রাদারের জেরার সময়ই সে ডঃ মুজাম্মিলের নাম প্রকাশ করে এবং তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই ফরিদাবাদে এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত থাকার সন্ধান মেলে।

ডঃ মুজাম্মিল ফরিদাবাদের আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির একজন চিকিৎসক ছিলেন, যা এই ঘটনার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে। জঙ্গিবাদে শিক্ষিত পেশাদারদের যোগদানের বিষয়টি পুলিশকে গভীরভাবে ভাবাচ্ছে।

সন্ত্রাস দমন অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য

জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে উপত্যকা এবং বাইরের রাজ্যগুলিতে সন্ত্রাসবাদের কাঠামো (terror ecosystem) উপড়ে ফেলার জন্য ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে। সম্প্রতি কুলগাম পুলিশ সন্ত্রাসীদের সহযোগী (Overground Workers - OGWs) এবং পাকিস্তান/পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoJK) থেকে পরিচালিত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নেয়। এই চলমান অভিযানের অংশ হিসেবেই ফরিদাবাদে এই সাফল্য এসেছে বলে পুলিশ মনে করছে।

পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, এই যৌথ অভিযান প্রায় পনেরো দিন ধরে চলছিল এবং এটি সন্ত্রাস ও তার সহযোগী নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে সরকারের 'জিরো টলারেন্স নীতি'র প্রতিফলন। সমগ্র ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের খোঁজ চলছে এবং তদন্ত আরও জোরদার করা হবে।


© লোকসংবাদ (LokSangBad)। সমস্ত স্বত্ব সংরক্ষিত।

নবীনতর পূর্বতন