Royal Bengal Terror: সুন্দরবনে বাঘের পেটে গ্রামের প্রধান , মাতলা নদীর তীরে শোকের ছায়া?

সুন্দরবনে বাঘের পেটে প্রধান রোজগেরে, মাতলা নদীর তীরে শোকের ছায়া


আমরা যখন আ
ধুনিক জীবনের ব্যস্ততা নিয়ে ভাবি, তখন ভুলে যাই দেশের এক প্রান্তের মানুষ এখনও প্রকৃতির হাতে বন্দী। সেই প্রকৃতির নাম সুন্দরবন। আর সেই প্রকৃতির সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। প্রতি বছরই এই ব-দ্বীপ অঞ্চলে বাঘের আক্রমণে বহু মানুষ প্রাণ হারান। সাম্প্রতিক কালে এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা সুন্দরবনের জীবন ও জীবিকার কঠিন বাস্তবতাটা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

ঘটনাটি ঘটেছিল মাতলা নদীর তীরবর্তী এক প্রত্যন্ত গ্রামে। প্রায় পঞ্চাশোর্ধ্ব জগন্নাথ মন্ডল, যিনি এই গ্রামের বহু পরিবারের মতো তাঁর জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করেন মাছ ধরে আর মধু সংগ্রহ করে, গত সপ্তাহে সঙ্গীসহ গিয়েছিলেন গভীর জঙ্গলের কাছাকাছি। পরিবারের শেষ সম্বল ছিল তাঁর মাছ ধরার একটি ছোট নৌকা আর ছিঁড়ে যাওয়া জাল।

তিনি জানতেন ঝুঁকি আছে। সুন্দরবনের খাঁড়িতে বাঘের আনাগোনা নতুন নয়। কিন্তু পেটের তাগিদে মৃত্যুভয় সেখানে গিয়েছিলেন। সকালের দিকে যখন তাঁরা একটি সরু খাঁড়ির ধারে জাল টানছিলেন, তখনই ঘটে যায় সেই ভয়াবহ ঘটনা। সঙ্গীরা দূর থেকে শুধু দেখলেন, জলের মধ্যে একটি বিশাল হলুদ-কালো ছায়া বিদ্যুতের গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ল জগন্নাথের ওপর। এক মুহূর্তের আর্তনাদ, তারপর সব চুপ। বাঘ টেনে নিয়ে গেল তাঁকে গভীর ম্যানগ্রোভের আড়ালে।


জগন্নাথের দেহ বাঘের মুখ থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় বন দফতর এবং গ্রামের মানুষ অনেক খুঁজেও শুধু তাঁর রক্তমাখা একটি গামছা খুঁজে পেয়েছেন।

তাঁর স্ত্রী, বছর চল্লিশের রাধা মন্ডলের এখন ঘোর অন্ধকার। তিনটি ছোট ছেলেমেয়েকে নিয়ে তাঁর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা তিনি জানেন না। রাধা চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, "ভাত নেই পেটে, তাই ভয়েও কাজ হয়নি। ভাবিছিলাম এবার একটু ভালো মাছ পাবো, ছেলেমেয়ের মুখে দু’মুঠো অন্ন দিতে পারবো। কিন্তু আমার সব শেষ।"

এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, গোটা গ্রামের মনে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা বলছেন, লকডাউন এবং পরিবেশ পরিবর্তনের ফলে নদী ও জঙ্গলের স্বাভাবিক জীবনচক্রে বড়সড় পরিবর্তন এসেছে। মাছ ও কাঁকড়ার খোঁজে মানুষ যেমন বনের গভীরে ঢুকতে বাধ্য হচ্ছে, তেমনই বাঘও খাদ্যের সন্ধানে মানুষের কাছাকাছি চলে আসছে।

সুন্দরবনের এই লড়াই এক চিরন্তন সংগ্রাম—যেখানে দারিদ্র্য, প্রকৃতি আর হিংস্রতা হাত ধরাধরি করে চলে। জগন্নাথের মৃত্যু হয়তো একটি পরিসংখ্যান মাত্র, কিন্তু তাঁর পরিবারের কান্না সুন্দরবনের সেই কঠিন বাস্তবের প্রতীক, যেখানে প্রতিটি সকাল শুরু হয় এক নতুন জীবন-মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে। এই সব হারিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য বিশেষ আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থাc করা এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি।

এই প্রতিবেদনটি সুন্দরবনের বাঘের আক্রমণের বিপদ এবং জনজীবনের সংগ্রাম সম্পর্কে শিক্ষামূলক আলোচনার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এখানে বর্ণিত চরিত্র এবং বিস্তারিত ঘটনাগুলি কাল্পনিক, তবে সুন্দরবনের সাধারণ বাস্তবতার ভিত্তিতে রচিত। এই তথ্যের ভিত্তিতে কোনো প্রকার বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

নবীনতর পূর্বতন