মাতৃগর্ভের শিশুর নাগরিকত্ব নিয়ে উদ্বেগ: ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও কেন বাংলাদেশে 'পুশব্যাক' সোনালী খাতুন?
লোকসংবাদ রাজনৈতিক ডেস্ক, কলকাতা:
পশ্চিমবঙ্গ/ঢাকা। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে দিল্লিতে আটক হওয়ার পর সপরিবারে বাংলাদেশে 'পুশব্যাক' (Deported) হওয়া অন্তঃসত্ত্বা মহিলা সোনালী খাতুন-কে (Sunali Khatun) নিয়ে তৈরি হলো নতুন আইনি মোড়। সোনালীর বাবা-মায়ের নাম ২০০২ সালের পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় থাকার প্রমাণ মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে, সোনালীর আইনজীবী দাবি করেছেন যে বাংলাদেশে শিশুটির জন্ম হলেও, ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী সে 'বংশোদ্ভূত নাগরিকত্ব' (Citizenship by Descent)-এর অধিকারী হবে।
সোনালী খাতুনের বাবা ভোদু শেখ ও মা জ্যোৎস্না বিবি বীরভূম জেলার মুরারাই বিধানসভার ভোটার ছিলেন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন (EC) দ্বারা প্রকাশিত ২০০২ সালের নির্বাচনী তালিকার বিশেষ সংশোধনী (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই তাঁদের নাম তালিকায় থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
পরিবারের আর্তি ও আইনি লড়াই
বর্তমানে স্বামী দানিশ ও আট বছরের পুত্র সহ সোনালী খাতুন বাংলাদেশে আটক অবস্থায় রয়েছেন। দিল্লির পুলিশ জুন মাসের ২৬ তারিখে তাঁদের 'অবৈধ অনুপ্রবেশকারী' তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। বীরভূমের পাইকর গ্রামের বাসিন্দা সোনালীর বাবা ভোদু শেখ উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, "আমাদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় আছে। এর চেয়ে বেশি আর কী প্রমাণ দিতে পারি আমার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে ও তার পরিবারকে ফিরিয়ে আনার জন্য?"
সোনালীর আইনজীবী রঘুনাথ চক্রবর্তী জানান, এই নতুন প্রমাণ সোনালীর মামলাকে আরও শক্তিশালী করেছে। আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে তাঁরা কেন্দ্রের ওপর চাপ বাড়াচ্ছেন, কারণ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কেন্দ্রকে অক্টোবর ২৪ তারিখের মধ্যে সোনালী ও তার পরিবারকে ভারতে ফিরিয়ে আনার কথা ছিল। যদিও বাংলাদেশ আদালতও ৩ অক্টোবর সোনালী ও অন্যদের ভারতীয় নাগরিক বলে ঘোষণা করে এবং তাঁদের দ্রুত ভারতে ফেরানোর নির্দেশ দেয়।
রাজনৈতিক চাপান-উতোর
শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটার তালিকা সংশোধনী প্রক্রিয়াকে (SIR) ব্যবহার করে বাংলায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, সোনালীর বাবা-মা ভারতীয় নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও একজন অন্তঃসত্ত্বা বাঙালি মহিলাকে অন্য দেশে ঠেলে দেওয়া শুধু প্রশাসনিক ভুল নয়, এটি রাজনৈতিক চক্রান্ত।
টিএমসি সাংসদ সমীরুল ইসলামের মতে, সোনালীর বাবা-মায়ের নাম পুরোনো ভোটার তালিকায় থাকা সত্ত্বেও তাঁকে 'অবৈধ বাংলাদেশি' তকমা দেওয়া হয়েছে। এটা দরিদ্র, বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি কেন্দ্রের বিদ্বেষের প্রমাণ।
🔔 প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ আপডেট:
আমরা প্রতিদিন আপনার জন্য সারাদিনের সব গুরুত্বপূর্ণ খবর ও আপডেট পোস্ট করি, তাই প্রতিদিন আমাদের পেজে চোখ রাখুন। এছাড়াও, আরও খবরের জন্য নিয়মিত আমাদের ফেসবুক পেজটি এখনই ফলো করুন!